প্রভু জগদ্বন্ধুর জীবন ও কর্ম

প্রভু জগদ্বন্ধুর জীবন ও কর্ম

 

ঊনবিংশ শতাব্দীর শুরুতে ধর্মীয় গোঁড়ামি, কুসংস্কার এবং জাতিভেদ প্রথা সমাজে তীব্রভাবে প্রভাব বিস্তার করে। এই হিংসা ও বিদ্বেষ সমাজকে হতাশার অন্ধকারে ডুবিয়ে দেয়। অশিক্ষা, কুশিক্ষা ও দারিদ্র্যের চাপে মানুষ ধর্মীয় মূল্যবোধ হারিয়ে পথভ্রষ্ট হয়ে পড়ে। এমনই এক সংকটপূর্ণ সময়ে ১৮৭১ সালের ১৭ মে ব্রিটিশ ভারতের মুর্শিদাবাদ জেলার ডাহাপাড়ায়, পিতার কর্মস্থলে জগদ্বন্ধুর জন্ম হয়।

 

 

প্রভু জগদ্বন্ধু সুন্দর
জগদ্বন্ধু সুন্দর (১৭ মে ১৮৭১ – ১৭ সেপ্টেম্বর ১৯২১)

 

  

পারিবারিক জীবনঃ

জগদ্বন্ধুর পৈতৃক নিবাস ছিল বাংলাদেশের ফরিদপুর জেলার গোবিন্দপুর গ্রামে। তাঁর পিতার নাম দীননাথ চক্রবর্তী ছিলেন একজন বিখ্যাত শাস্ত্রজ্ঞ ব্রাহ্মণ পণ্ডিত এবং পাণ্ডিত্যের জন্য ন্যায়রত্ন উপাধি লাভ করেছিলেন এবং মাতার নাম বামাসুন্দরী দেবী। মাত্র ১৪ মাস বয়সে তাঁর মা এবং পাঁচ বছর বয়সে তাঁর পিতা মারা যান। 
জগদ্বন্ধু ছিলেন অত্যন্ত সুন্দর, তাঁর গায়ের রঙ ছিল উজ্জ্বল সোনার মতো। নিম্নবর্ণের হিন্দুদের প্রতি তাঁর গভীর সহানুভূতির কারণে তিনি “জগদ্বন্ধু” উপাধি পান এবং এই নামে বিশেষ পরিচিতি লাভ করেন। তিনি বৈষ্ণব ধর্মীয় কীর্তন সংগ্রহ, রচনা এবং পরিবেশনের জন্যও বিখ্যাত ছিলেন।

প্রভু জগদ্বন্ধুর জীবন ও কর্মঃ

যখন জগদ্বন্ধুর বয়স মাত্র চৌদ্দ মাস, তখন তাঁর মা মারা যান। তাঁর পিতা দীননাথ তখন শিশু জগদ্বন্ধুকে নিয়ে নিজ গ্রাম গোবিন্দপুরে ফিরে আসেন। সেখানে তাঁর জেঠতুত বোন দিগম্বরী দেবী জগদ্বন্ধুর লালন-পালনের দায়িত্ব নেন। পাঁচ বছর বয়সে জগদ্বন্ধু তাঁর পিতাকেও হারান। কয়েক মাস পর চক্রবর্তী পরিবার ফরিদপুরের ব্রাহ্মণকান্দায় চলে আসে। জগদ্বন্ধু ফরিদপুর জেলা স্কুলে পড়াশোনা শুরু করেন, কিন্তু শেষ করেন পাবনা জেলা স্কুলে।

পাবনার কাছে একটি প্রাচীন বটগাছের নিচে বাস করতেন এক সাধু, যাঁকে স্থানীয়রা ‘ক্ষ্যাপাবাবা’ বলত। একদিন জগদ্বন্ধুর সঙ্গে তাঁর দেখা হয়, এবং তাঁদের মধ্যে গভীর বন্ধন গড়ে ওঠে। জগদ্বন্ধু তাঁকে ‘বুড়ো শিব’ বলে ডাকতেন। অবসর সময়ে তিনি বটগাছের নিচে গিয়ে ধ্যানে মগ্ন হতেন।
কিছুদিনের মধ্যে ফরিদপুর ও আশপাশে তাঁর তরুণ ভক্তদল গড়ে ওঠে। একদিন জগদ্বন্ধু তীর্থযাত্রায় বের হন, বিভিন্ন গ্রাম ও তীর্থস্থানে হরিনাম প্রচার করতে করতে শ্রীধাম বৃন্দাবনে পৌঁছান। সেখানে তাঁর সাধনা আরও গভীর হয়। বৃন্দাবনে কিছুকাল থাকার পর তিনি ফরিদপুরে ফিরে আসেন।
ফরিদপুরের উপকণ্ঠে বুনোবাগদি, সাঁওতাল প্রভৃতি সম্প্রদায় বাস করত, যাঁরা তৎকালীন সমাজে অস্পৃশ্য ও অবহেলিত ছিল। দারিদ্র্য ও অসম্মান থেকে মুক্তির জন্য অনেকে ধর্মান্তরের কথা ভাবছিল। তখন জগদ্বন্ধুর করুণার দৃষ্টি পড়ে তাঁদের ওপর। তিনি বাগদি সর্দার রজনীকে স্নেহে জড়িয়ে নেন। রজনী বলেন, “আমরা নীচু জাতের, সবাই আমাদের তুচ্ছ করে, তুমি আমাকে বুকে জড়ালে!” প্রভু বললেন, “মানুষের মধ্যে উঁচু-নীচু নেই। সবাই ঈশ্বরের সন্তান। জাতি বা বর্ণের ভেদ নেই। মানুষের মর্যাদা তার গুণ ও কর্মে। তোমরা শ্রীহরির দাস। আজ থেকে তোমার নাম হরিদাস মোহন্ত।” প্রভুর কৃপায় হরিদাস মোহন্ত শীঘ্রই বিখ্যাত পদকীর্তনীয়া হয়ে ওঠেন।
যশোর, ফরিদপুর, বরিশালে হরিনাম কীর্তনের প্রবল জাগরণ শুরু হয়। একদিন প্রভু ভক্তদের নিয়ে ভ্রমণে বেরিয়ে ফরিদপুরের এক জঙ্গলাকীর্ণ এলাকায় বলেন, “এখানে আমি শ্রীঅঙ্গন প্রতিষ্ঠা করব।” ভক্ত শ্রীরামকুমার মুদি জমি দান করেন। ১৮৯৯ সালে প্রভুর নির্দেশে শ্রীধাম শ্রীঅঙ্গন প্রতিষ্ঠিত হয়। এই তীর্থভূমি ভক্ত ও গুণীজনদের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে।

গম্ভীরা লীলাঃ

প্রভু জগদ্বন্ধু ফরিদপুর শহরের অনতিদূরে এক জঙ্গলাকীর্ণ স্থানে এসে বললেন, “এখানেই আমি শ্রীঅঙ্গন প্রতিষ্ঠা করবো।” এরপর তাঁর প্রেরণায় ফরিদপুরের শ্রীঅঙ্গন প্রতিষ্ঠিত হলো। প্রভু জগদ্বন্ধুর গম্ভীরা লীলা প্রথম শ্রীঅঙ্গনে শুরু হয়। ১৩০৯ সালের আষাঢ় মাস থেকে আরম্ভ করে ১৩২৫ সালের ১৬ ফাল্গুন মাস পর্যন্ত অর্থাৎ ১৬ বছর ৮ মাস জগদ্বন্ধু গম্ভীরা লীলায় অবস্থান করেন। এসময় প্রভু জগদ্বন্ধু মৌনাবলম্বন করেছিলেন।

হরিপুরুষ তত্ত্ব:

“অনাদির আদি গোবিন্দ স্বয়ং ভগবান শ্রীশ্রীকৃষ্ণ ও শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গ। শ্রীশ্রীকৃষ্ণলীলা ও শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গলীলা এই দুই লীলার সর্বসমষ্টি শক্তিসম্পন্ন যিনি, তিনিই শ্রীশ্রীহরিপুরুষ জগদ্বন্ধু । আমি সেই রে সেই, জানলি?”

“THE LILA COMBINATON OF ALL THINGS”

আমি পৃথিবীর কেন্দ্র।  আমি পদ্মপলাশলোচন হরি।

আমি একমাত্র পুরুষ আর সবই প্রকৃতি।

অনন্ত বিগ্রহে থেকে আমি পূজা গ্রহণ করি। তাই আমি অনন্তানন্তময়।

আমি হরিনামের এ ভিন্ন আর কারো নই।

“এইবার সবকেই হরিনাম আস্বাদন করাইব, তবে আমার নাম জগদ্বন্ধু। এবার মানুষ ত মানুষ, পশু, পক্ষী, কীট পতঙ্গ, বৃক্ষলতা এমনকি অনুপরমাণুদিগকে পর্যন্ত আমার স্বরূপ আস্বাদন করাইব, তবে আমার নাম জগদ্বন্ধু”।

আশ্রম প্রতিষ্ঠা ও সামাজিক কাজঃ

 

শ্রীধাম শ্রীঅঙ্গন বা শ্রীঅঙ্গন বাংলাদেশের ফরিদপুর জেলায় অবস্থিত হিন্দু মহানাম সম্প্রদায়ের একটি আশ্রম, যা জগদ্বন্ধু সুন্দর ১৮৯৯ সালে প্রতিষ্ঠা করেন। এই আশ্রমটি বাংলাদেশের হিন্দু মহানাম সম্প্রদায়ের মূল কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত।

শ্রীঅঙ্গন

 

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চলা কালীন সময় পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ৮ জন আশ্রমবাসীকে ধর্মীয় প্রার্থনা করার সময় হত্যা করে এবং আশ্রমটিতে ব্যাপক ধ্বংস লীলা চালায়।

এই আশ্রমটিতে প্রতিবছর জন্মাষ্টমী খুব জাক-জমকের সাথে পালন করা হয়। এখানে একটি রথ যাত্রা উৎসবের আয়োজনও করা হয়।

অলৌকিক ঘটনা ও মহিমাঃ

প্রভু জগদ্বন্ধু সুন্দরের জীবনে বহু অলৌকিক ঘটনা ঘটে। তাঁর স্পর্শে রোগ মুক্তি, কানে না-শোনা মানুষ শ্রবণশক্তি ফিরে পেতেন, এমনকি অনেকে তাঁকে মৃত্যুর দ্বার থেকে ফিরে আসা রূপে বিবেচনা করতেন। এসব ঘটনা প্রমাণ করে যে, তিনি কেবল ধর্মগুরুই নন, এক যুগাবতার। যদিও তিনি নিজে কখনও নিজের অলৌকিকতা প্রচার করেননি। বরং বলতেন, “আমি একজন সেবক মাত্র। আমার ভেতর যে শক্তি, তা সবার ভেতরেই আছে—শুধু তার প্রকাশ প্রয়োজন।”

প্রভুর মহাপ্রয়াণঃ

১৭ সেপ্টেম্বর, ১৯২১ সালে তাঁর প্রতিষ্ঠিত শ্রীধাম শ্রীঅঙ্গনেই তিনি ইহোলোক ত্যাগ করেন। জগদ্বন্ধু সুন্দরের নেতৃত্বে সর্বস্তরের মানুষ এক পরিপূর্ণ মানবিক, জাত-পাত হীন উদার সমাজ গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখেছিল। উচ্চারিত হয়েছিল, স্মৃতিশাসিত ব্রাহ্মণ্য সংকীর্ণতার বিরুদ্ধে এক অমোঘ প্রতিবাদের ভাষা-

‘আমি সমাজের বাঁধ ভেঙ্গে দেবো’

তারঁ প্রতিবাদের পদ্ধতি ছিল নিতান্ত সহজ ও সরল। সংগীত ও নৃত্যের আশ্রয়ে সেদিন নামকীর্তন ও নগরকীর্তনকে জনসংযোগের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার ক’রে প্রভু জগদ্বন্ধু সকলকে ডাক দিয়ে বলেছেন-

 

হরি নাম লও ভাই, আর অন্য গতি নাই,

হের প্রলয় এল প্রায়।

যদি সৃষ্টি রাখ ভাই, হরিনাম প্রচার কর।।”

শতবার্ষিকী উদযাপন: এক নব জাগরণের আহ্বান

 

২০২৫ সালে শ্রী শ্রী প্রভু জগদ্বন্ধু সুন্দরের জন্মের শততম বার্ষিকী পালনের জন্য মহানাম সম্প্রদায়, বাংলাদেশ। শ্রীধাম শ্রী অঙ্গণ, ফরিদপুরে  বিভিন্ন আয়োজন করা হচ্ছে। এই উদযাপনে অন্তর্ভুক্ত থাকবে—

অনুষ্ঠান সূচী

 

২১ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ৫ মে ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, সোমবার

বিকাল ৫ ঘটিকায়:

শ্রীমদ্ভাগবত পাঠ

পরিবেশনায়:

শ্রীমৎ কান্তিবন্ধু ব্রহ্মচারী

সভাপতি, মহানাম সম্প্রদায়, বাংলাদেশ।

 

রাত্র ৮ ঘটিকায়: শুভ অধিবাস ও কীৰ্ত্তন

🙏 ২২ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ৬ মে ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, মঙ্গলবার

অষ্টপ্রহরব্যাপী শ্রীশ্রী মহানাম মহাকীৰ্ত্তন

সকাল ৮ ঘটিকায়:

শ্রীশ্রী প্রভু জগদ্বন্ধুসুন্দরের শুভ অভিষেক এবং ব্রাহ্মণকান্দা শ্রীঅঙ্গণে উদয়াস্ত শ্রীশ্রী মহানাম মহাকীৰ্ত্তন

 

🙏 ২৩ ও ২৪ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ৭ ও ৮ মে ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, বুধ ও বৃহস্পতিবার

ষোড়শপ্রহরব্যাপী শ্রীশ্রী তারকব্রহ্ম হরিনাম কীর্ত্তন

 

🙏 ২৫, ২৬ ও ২৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ৯, ১০ ও ১১ মে ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, শুক্র, শনি ও রবিবার

চব্বিশপ্রহরব্যাপী শ্রীশ্রী মহানাম মহাকীৰ্ত্তন

 

🙏 ২৬ ও ২৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১০ ও ১১ মে ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, শনি ও রবিবার

বিকাল ৪.০০ ঘটিকায়: আলোচনা সভা

 

🙏 ২৮ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১২ মে ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, সোমবার

শ্রীশ্রী রাধাগোবিন্দের অষ্টকালীন লীলাস্মরণ কীর্ত্তন ও শ্রীশ্রী বন্ধুসুন্দরের ফুলদোল

 

🙏 ২৯ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৩ মে ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, মঙ্গলবার

কুঞ্জভঙ্গ, নগরকীর্ত্তন, জলকেলী ও মহোৎসব

এই উৎসবের মূল উদ্দেশ্য হলো—প্রভুর জীবনের শিক্ষাকে আগামী প্রজন্মের কাছে পৌছে দেওয়া এবং সমাজকে আবার প্রেম, সহানুভূতি, মানবতা ও নামস্মরণে উদ্বুদ্ধ করা।

প্রভুর বাণীর প্রাসঙ্গিকতা আজও অম্লানঃ

বর্তমান সময়ে, যখন বিশ্ব জুড়ে হিংসা, অসহিষ্ণুতা ও আত্মকেন্দ্রিকতা বেড়ে চলেছে, তখন প্রভু জগদ্বন্ধু সুন্দরের বাণী আমাদের পথপ্রদর্শক। তিনি বলেছিলেন, “নিজেকে জানো, অন্যকে ভালোবাসো, ঈশ্বর আপনিই ধরা দেবেন।” এই সরল অথচ গভীর উপলব্ধি মানুষকে আত্মোন্নতির পথে এগিয়ে নিতে পারে।

তাঁর কিছু বাণী রয়েছে, তার মধ্যে পাঁচটি উল্লেখযোগ্য হলো-

১। ভ্রষ্টবুদ্ধি হয়ে মাতা-পিতার মনে কষ্ট দিতে নেই।

২। যে সংসারে শান্তি পায় না, সে সংসার ত্যাগ করলেও শান্তি পায় না।

৩। কেউ মূর্খ থাকিও না। মূর্খ আমার কথা বুঝিতে পারিবে না। অজ্ঞানের হরিভক্তি হয় না।

৪। বৃথা বাক্যব্যয় দুর্ভাগ্য। পরচর্চা কর্ণে বা অন্তরে স্থান দিও না। পরচর্চা, পরনিন্দা ত্যাগ কর। ঘরের দেয়ালে লিখে রেখ, পরচর্চা নিষেধ।

৫। জীবদেহে নিত্যানন্দের বাস। কোন জীবকে আঘাত করলে নিত্যানন্দকে আঘাত করা হয়।

শিক্ষা:
প্রভু জগদ্বন্ধুর জীবন থেকে আমরা শিখি যে, সব মানুষ সমান, কেউ উঁচু বা নীচু নয়। কোনো মানুষ ঘৃণ্য বা অস্পৃশ্য নয়। সমাজে প্রত্যেকের সমান অধিকার রয়েছে। পিতা-মাতার প্রতি অসম্মান বা কষ্ট দেওয়া উচিত নয়। সাধনার জন্য সংসার ত্যাগের প্রয়োজন নেই। পরনিন্দা বা পরচর্চা করা অনুচিত, এগুলো পরিহার করা উচিত। এই মূল্যবোধগুলো আমাদের নিজেদের জীবনে গ্রহণ ও অনুসরণ করা উচিত।

 

সংকলন

জগদ্বন্ধুসুন্দর রচিত বৈষ্ণব ধর্মীয় সঙ্গীত বা কীর্তন সম্পর্কিত উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ হলো:

জগদ্বন্ধু সুন্দরের অভয় বাণীঃ

“তোরা আমায় স্মরণ করিস্ আর না-ই করিস্, আমি তো’দিগকে নিত্য চিরকাল স্মরণ করবো। স্মরণ করে রক্ষা করবো।”

 

উপসংহারঃ

জাতিভেদ, বর্ণভেদ, এবং ধর্মীয় বিভেদের কারণে মানুষের মধ্যে যে বিভক্তি ও অশান্তি সৃষ্টি হয়, তা কখনোই শান্তি বা কল্যাণ বয়ে আনে না। ঠাকুর রামকৃষ্ণ মানুষকে শিবজ্ঞানে সেবার শিক্ষা দিয়েছেন। কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সকলের মধ্যে ঈশ্বরের সন্ধান করেছেন। আর প্রেম ও আধ্যাত্মিকতার প্রতীক প্রভু জগদ্বন্ধু মানুষের মধ্যেই ঐশ্বরিক সৌন্দর্য দেখেছেন। এই শুভ আবির্ভাব উৎসবে আমাদের প্রতিজ্ঞা হোক—জাতিভেদ ও বর্ণভেদ ভুলে, ধর্মীয় সহিষ্ণুতা অক্ষুণ্ণ রেখে, আমরা মানবতার বোধে সকলকে উদ্বুদ্ধ করব। প্রভু জগদ্বন্ধুর আদর্শে আমরা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক নতুন বিশ্ব গড়ে তুলব। প্রভু আমাদের পথপ্রদর্শক হোন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top